Friday, May 29, 2020

গল্প- নির্মলা দ্বিতীয় পর্ব

                       গল্প- নির্মলা
                                  বিমান চন্দ্র দাস 
                        (দ্বিতীয় পর্ব)

সবাই একসঙ্গে নতুন মতিঝিলে প্রবেশ করলো। পুরো চত্বরটা তারা পায়ে হেঁটে ঘুরবে ঠিক করেছে। নির্দিষ্ট দূরত্ব বরাবর কয়েক জায়গায় বিশ্রামের জন্য ছাউনি করা আছে এবং তার নীচে বসার জন্য উপযুক্ত জায়গা। সেই ছাউনির তলায় তারা মাঝে মাঝে বসে জিরিয়ে নিচ্ছে। কাকলি আর সেবিনা সুযোগ খুঁজছিল কখন মৃণালকে কথা গুলো বলবে। কিছুক্ষন পরে সেই সুযোগ এসেই গেল। সুমন্ত নির্মলার ছবি তুলে দিতে ব্যস্ত ঠিক সেই সময়টাকেই কাজে লাগালো তারা। যদিও বা সেখানে রিমি উপস্থিত ছিল তবু বললো। সেবিনা শুরু করলো আচ্ছা মৃণাল একটা সত্যি কথা বলতো তুই কি নির্মলাকে ভালোবাসিস? কাকলি বলে উঠলো আমরা তোর আচরনে অনেক কিছু বুঝতে পারছি, সত্যি বলবি কিন্তু ; মিথ্যা বলে পার পাবিনা।  মৃণাল নিরাশা ভরা মুখেই একটা মুচকি হাসি দিলো। রিমি পাশ থেকে বলে উঠলো কি ব্যাপার মৃণাল তলে তলে এত কিছু? মৃণাল উত্তর দিলো হ্যাঁ ভালোবাসি, নির্মলা কে ভালোবাসি, সুমন্ত কে ভালোবাসি, তোরাকে ভালোবাসি, এতে লুকানোর কিছু নেই তো। রিমি বললো এই শোন তুই কবিতা লিখিস বলে সব সময় হেঁয়ালি করে কথা বলাটা কি জরুরী। যেটা জিজ্ঞাসা করা হলো সেটার সোজাসুজি উত্তর দে না। কাকলি বললো সবাই থেমে যা অন্য ব্যাপারে আলোচনা শুরু কর, ওদের ছবি তোলা হয়ে গেছে এদিকেই আসছে। তারপর আর সেই ব্যাপারে আলোচনা করলো না কেউই। সেদিন সারাদিন খুব মজা করলো তারা। বিকেল 3 টে নাগাদ বেড়িয়ে বাড়ির পথে রওনা দিল একসঙ্গে। তারা বাড়ি থেকে সবাই টিফিনে খাবার নিয়ে গেছিলো কারন সুমন্ত বলেছিল সেখানে যে খাবার পাওয়া যায় সেটা তার ঠিক রুচি হয়না। তবে তারা বেরোবার সময় দেখলো একটা ক্যানটিন তৈরীর কাজ চলছে। আর যেহেতু মতিঝিলের ভিতরে বাইরের খাবার খাওয়া বারন তাই তারা বেরোবার পর তাদের টিফিনে নিয়ে যাওয়া খাবার খেলো। সন্ধ্যা হয়ে এলো সবার বাড়ি পৌঁছাতে।
মৃনাল হাত মুখ ধুয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে রাত প্রায় 10 টার দিকে তার কবিতার ডায়েরিটা নিয়ে বসলো, আজ তারা সবাই ঘুরে এলো সেই বিষয়ে একটি কবিতা লিখতে শুরু করলো। হঠাৎ সেবিনার ফোন এলো -
মৃনাল- হ্যাঁ বল...
সেবিনা- কি করছিস?
মৃনাল- এই একটু ডায়েরিটা নিয়ে বসেছি।
সেবিনা - ও আচ্ছা, তাহলে পরে করবো নাকি?
মৃনাল- না,বলনা কোনো ব্যাপার নাই...
সেবিনা- তাহলে একটু ধর ফোনটা, কাকলি কে সঙ্গে নি, আজকে আলোচনা টা শেষ করেই ছাড়বো।
মৃনাল- উফ্ তোরাও পারিস, ছার না এসব।
সেবিনা- তুই চুপ কর, আজ এই আলোচনা শেষ করবোই।
সেবিনা কাকলি আর রিমিকে সঙ্গে নিলো, এই দেখে মৃণাল বললো সুমন্ত কেন বাকি থাকে ওকেও নিয়ে নে। সঙ্গে সঙ্গে রিমি ঠিক সেটাই করলো। প্রথমে সুমন্তকে পুরো ব্যাপার টা বুঝিয়ে বলা হলো, তার পর কাকলি বললো এবার শুরু কর মৃণাল....
মৃণাল শুরু করার আগে বললো তোদের কাছে অনুরোধ এই কথাটা নির্মলার কানে না পৌঁছায়। তোরা তো জানিস যে, যে কোনো কাজে যে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে তার ভালো দিক আর খারাপ দিক ভাবনা চিন্তা করে তারপর পদক্ষেপ নি। এক্ষেত্রেও তার অনথ্যা করিনি।
জানিনা নিজের অজান্তেই কখন তাকে ভালোবেসে ফেলেছি তবে সেটা কোনোদিন তার সামনে প্রকাশ করবো না, তার যথেষ্ট কারনও আছে। প্রথমত,  ভালোবাসার জন্য বন্ধুত্বটা নষ্ট হোক সেটা আমি চায় না। দ্বিতীয়ত, ওদের পরিবার আর আমাদের পরিবারের সামঞ্জস্যতা দূর দূরান্ত পর্যন্ত খুঁজে পাবি না। কোথায় সে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বাড়িতে ছোট থেকে বড়ো হয়েছে আর কোথায় আমি....  , কোনো মিল নেই রে আর তাছাড়া কিছু দিন আগেই গল্পের ছলে জানতে পারলাম তার বাবা নাকি তার জন্য সরকারী চাকুরি করা পাত্র খুঁজছে। তাহলে তোরাই ভাব, আমি এখোনো বেকার তাছাড়া কিছুদিনের মধ্যে যদি নিজের পায়ে দাঁড়িয়েও যায় তবু সেটা সরকারী চাকুরি হবে না হবে ব্যাবসা। কারন সেটাই আমার ইচ্ছা। তাই সব দিক দিয়ে ভেবে দেখলাম আমার এই ব্যাপারে না এগোনোই ভালো।
সবাই একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো, সুমন্ত বললো আমি তোর সঙ্গে একমত ভাই, অন্য পথে এগোতে গিয়ে বন্ধুত্বটা নষ্ট করিস না। সেবিনা বললো তাই বলে ওকে কোনোদিন জানাবিও না? এরকম ও তো হতে পারে যে ওদের ফ্যামিলি তোকে মেনে নিলো। মৃনাল একটা অবসাদে ভরা মুচকি হাসি দিয়ে বললো সেটা হলে এই পৃথিবীতে আমার থেকে বেশী খুশি কেউ হতো না। কিন্তু তোরা এটা ভালো ভাবেই জানিস যে এর নিশ্চয়তা খুবই কম আর আমি যেটা আশঙ্কা  করছি তারই সম্ভাবনা বেশী তাই এই কথা গুলো এখানেই ভুলে যা,  কাল কলেজ গিয়ে সবাই স্বাভাবিক আচরণ করবি যাতে নির্মলা এসবের বিন্দু মাত্র টের না পায়। রিমি বললো এই শোন, মৃণাল যখন কথা গুলো বলছিল তখন নির্মলা আমাকে ফোন করেছিলো, ওকে একবার ফোন করতে হবে আমি রাখছি। মৃণাল বললো হ্যাঁ কর তবে খুব সাবধানে। হ্যাঁ কোনো চিন্তা করিস না রিমি এই বলে ফোনটা রেখে দিলো। মৃণাল সবার উদ্দেশ্যে বললো আমিও রাখছি রে, যেই কবিতাটা শুরু করেছি সেটা শেষ করে ঘুমাবো। এবার সবাই একসঙ্গে বলে উঠলো ঠিক আছে , শুভ রাত্রি।

           (তৃতীয় পর্ব প্রকাশ করা হবে 01/06/2020 - তারিখে অর্থাৎ সোমবার । )



 Story- Nirmala
 Biman Chandra Das
 (Episode 2)

 Everyone entered the new Motijheel together.  They have decided to walk around the whole square.  There are several places to rest along the distance and a suitable place to sit under it.  From time to time they are sitting on the floor of the tent.  Kakli and Sebina were looking for an opportunity to talk to Mrinal.  After a while that opportunity came.  They used the time when Sumanta was busy uploading pictures of Nirmala.  Although Rimi was present there, he said.  Sebina started. Well, Mrinal used to tell a truth. Do you love Nirmala?  Kakli said we understand a lot of your behavior, to be honest but;  You can't lie.  Mrinal gave a smirk on his face full of despair.  Rimi said from the side, what's the matter, there is so much under Mrinal?  Mrinal replied yes I love, I love Nirmala, I love Sumant, I love you, there is nothing to hide in it.  Rimi said, "Listen, you write poetry. Is it necessary to talk all the time with riddles?"  Do not answer directly to what is asked.  Kakli said everyone stop and start discussing other things, their pictures have been taken and they are coming here.  Then no one discussed the matter.  They had a lot of fun that day.  They left at 3 in the afternoon and left for home together.  They all took food from the house to Tiffin because Sumant said that the food available there was not to his liking.  But when they came out, they saw that a canteen was being built.  And since it is forbidden to eat outside inside Motijheel, they eat the food taken to their tiffin after leaving.  It was evening to reach everyone's house.
 Mrinal washed his hands and took some rest and sat down with his poetry diary at around 10 pm, today they all came back and started writing a poem about it.  Suddenly Sebina's phone rang -
 Mrinal: Say yes ...
 Sebina: What are you doing?
 Mrinal- I am sitting with this little diary.
 Sebina - Well, then I will do it later?
 Mrinal- No, it doesn't matter ...
 Sebina: Then hold the phone, Kakli is not with me.
 Mrinal- Uftorao paris, chara na ebas.
 Sebina: Shut up, I'll finish this discussion today.
 Sebina took Kakli and Rimi with her. Seeing this, Mrinal said why Sumant is left, take her too.  Rimi immediately did just that.  First Sumant was told the whole thing, then Kakli said start now Mrinal ....
 Before Mrinal started, he said that the request to you did not reach Nirmala's ears.  You know that before taking any step in any work, one thinks of its good side and bad side and then does not take any step.  In this case too, I did not harass him.
 I don't know when I fell in love with him without knowing it, but I will never reveal it to him, he has enough reasons.  First of all, I don't want friendship to be ruined for love's sake.  Second, their family and our family's harmony will not be found far and wide.  Where he grew up in an air-conditioned house and where I ...., there is no match Ray and a few days ago I found out through the story that his father is looking for a government job for him.  Then you think, I am still unemployed and even if I stand on my own two feet in a few days, it will not be a government job but a business.  Because that is my wish.  So I thought in all aspects that it is better not to go ahead in this matter.
 Everyone let out a sigh, Sumant said I agree with you brother, don't ruin the friendship by going the other way.  Sebina said so never let him know?  It may be that their family has accepted you.  Mrinal said with a tired smile and said that no one in this world would be happier than me.  But you know very well that the certainty is very low and the probability of what I am fearing is high, so forget these things here, I will go to college tomorrow and everyone will behave normally so that Nirmala doesn't just notice the point.  Rimi said listen, Nirmal called me when Mrinal was talking, I have to call him once.  Mrinal said yes but very carefully.  Yes, don't worry, Rimi said and left the phone.  Mrinal said to everyone, I am also keeping Ray, I will finish the poem I started and go to sleep.  This time everyone said together, OK, good night.

 (The third episode will be released on 01/06/2020 - Monday.)

Sunday, May 24, 2020

গল্প- নির্মলা প্রথম পর্ব

                       গল্প - নির্মলা
                               বিমান চন্দ্র দাস
                   
                          প্রথম পর্ব

বয়স 19 - এর তরুনী নাম নির্মলা। তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। সুন্দরী, সুশীলা, সুঠাম গঠন।  এককথায় অসামান্যা সুন্দরী। বাড়ি বিহারের ভাগলপুর তবে থাকে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে, তার মামার বাড়িতে। ছোট বেলা থেকে সেখানেই তার বড়ো হয়ে ওঠা। বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজের বাংলা অনার্সের ছাত্রী সে। মেধার তালিকায় সমস্ত কলেজের মধ্যে প্রথম পাঁচজনের মধ্যে নাম থাকে তার তবে এতকিছু গুনের অধিকারিণী হয়েও লেশমাত্র অহংকার নেই তার । কলেজে অনেক বন্ধু বান্ধবী থাকলেও হাতে গোনা কয়েকজন বন্ধু ছাড়া সেরকম কারো সঙ্গে বেশি মেলামেশা করে না সে, পড়াশোনার দিকেই ঝোঁক তার বেশি। সেই হাতে গোনা কয়েকজন বন্ধুদের নাম হলো - মৃণাল, রিমি, কাকলি, সেবিনা আর সুমন্ত । প্রথম বর্ষে তো রিমি আর সেবিনা ছাড়া কারো সঙ্গে কথাই বলতো না, দ্বিতীয় বর্ষ থেকে ধীরে ধীরে সবার সঙ্গে মিশতে শুরু করে। আর এখন তো তাদের ছয়জনের বন্ধুত্বের চর্চা কলেজে সবার মুখে মুখে শোনা যায়।
তাদের ছয়জনের মধ্যে যেমন পড়াশোনা নিয়ে আলোচনা হয় তেমনই জমিয়ে আড্ডাও হয় বেশ। ওদের কারো বাড়ি কলেজের কাছাকাছি নয়, কেউ আসে ট্রেনে তো কেউ বা বাসে। বাকিদের মতো তাদের বন্ধুত্বেও খুনসুটি পনা ছিল, ঝালমুড়ির ঠোঙা কাড়াকাড়ি, ক্যানটিনে আড্ডা সবই হতো, তবে সবার থেকে তাদের আলাদা করে যে জিনিসটা সেটা হলো তাদের একে অপরের প্রতি প্রান দেওয়া ভালোবাসা। একদিন কথায় কথায় নির্মলা বললো সে নাকি কোনোদিন নতুন মতিঝিল যায়নি, সোশাল মিডিয়ায় অনেককে সেখানকার ছবি পোস্ট করতে দেখেছে কিন্তু চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ এখোনো হয়ে ওঠেনি। সেই সময় তো সবাই স্বাভাবিক কথাবার্তা বলে উঠে গেল সেখান থেকে কিন্তু নির্মলা জানে না পরে বাকি বন্ধুরা মিলে নির্মলাকে নতুন মতিঝিল নিয়ে যাবার পরিকল্পনা করে নিয়েছে। পরদিন কলেজে এসে নির্মলাকে সবাই চমকে দিলো। প্রথমেই সেবিনা বললো তাহলে রবিবার কখন বেরোবি বাড়ি থেকে? সঙ্গে সঙ্গে মৃণাল বলে উঠলো তোর সেই হলুদ পোষাক টা পড়ে আসিস, তোর গত জন্মদিনে যেটা পড়েছিলি, দারুন মানায় তোকে। নির্মলার কিছু বুঝতে পারার আগেই সুমন্ত বলে উঠলো বাড়ি ফেরার সময় যদি একটু দেরি হয়ে যায় তবে মামাকে স্টেশন পর্যন্ত ডেকে নিস। নির্মলা কিছু বুঝতে না পেরে বিকৃত মুখে প্রতিক্রিয়া দিলো, মানে? তোরা কি বলছিস আমি কিছুই বুঝলাম না। সঙ্গে সঙ্গে রিমি উত্তর দিলো বা..রে.. , ম্যাডামের জন্য কষ্ট করে মতিঝিল যাবার পরিকল্পনা করলাম আর ম্যাডাম বলে কিনা কিনা কিছুই বুঝতে পারছি না।
নির্মলা 'থ'। কথাটা শুনে খুশিতে নাচবে নাকি মামা রাজি হবে কিনা সেই চিন্তা করবে ভেবে পাচ্ছিলো না। তার এরকম খুশির মধ্যেও ফ্যাকাসে মুখ দেখে কাকলি বললো তোর মামাকে রাজি করানোর দায়িত্ব আমাদের, সেই চিন্তা তুই ছেড়ে দে। এবার আর খুশিতে চোখের জল থামতে পারলো না নির্মলা। রিমি, কাকলি আর সেবিনা কে জড়িয়ে ধরলো সে। পাশ থেকে মজার ছলে মৃণালের মন্তব্য - হ্যাঁ-হ্যাঁ, এত কষ্ট করে পরিকল্পনা টা আমি করলাম আর এখন ওরাই সব। ঠিক আছে তোরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদ আমি চললাম। সুমন্ত সেই সুরে সুর মিলিয়ে বললো তোর সঙ্গে আমিও আছি ভাই , চল আমরা দুজনেই কেটে পড়ি। তখন চার জন আলিঙ্গন ছেড়ে একসঙ্গে বলে উঠলো ঐ পাগলারা শোন এইদিকে। নির্মলা কান্নার স্বরে হালকা ভারী আওয়াজে বলে উঠলো এক মিনিটও শান্তি দিবি না তাই না। এই বলে মৃণালের পিঠে জোরে ব্যাগের এক আঘাত করলো। সুমন্ত নির্মলা কে রাগানোর জন্য হেসে  বললো মৃনাল তোর পিঠে ধুলো ছিল সেটা ব্যাগ দিয়ে ঝেরে দিলো।
হ্যাঁ এরকমই মিষ্টি তাদের সম্পর্ক।
মৃনাল যে শুধু এবারই নির্মলার জন্য এরকম পরিকল্পনা করল তাই নয় এর আগেও করেছে। তাদের সবার মধ্যে একটা অন্তরঙ্গ সম্পর্ক আছে ঠিকই কিন্তু ইদানীং মৃণাল নির্মলার প্রতি একটু বেশী আগ্রহ দেখাচ্ছে, একটু অন্যরকম আগ্রহ। আর সেটা সেবিনা খুব ভালোভাবেই লক্ষ্য করেছিল, ব্যাপার টা সে কাকলি কে জানালো। তারপর তারা দুজনেই ঠিক করলো ব্যাপার টা নিয়ে তারা আলাদা ভাবে মৃণালের সঙ্গে কথা বলবে। এই বিষয়ে আলোচনার জন্য মতিঝিল বেড়াতে যাবার দিনই ছিল মোক্ষম সময় , আর ঠিক সেটাই করলো তারা।
               
                     (দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশ করা হবে  29/05/2020 তারিখ, শুক্রবার)


Story - Nirmala

    -Biman Chandra Das


          (The first episode)

 Nirmala is a young girl of 19 years.  Third year student.  Beautiful, well-mannered, well-built.  In a word, she is extraordinarily beautiful.  His home is in Bhagalpur, Bihar, but in Murshidabad, West Bengal, at his uncle's house.  He grew up there from a young age.  She is a Bangla Honors student of Baharampur Krishnanath College.  He is in the top five of all the colleges in the merit list, but he is not arrogant even though he has so many qualities.  Although he has many friends in college, he does not hang out with anyone except a handful of friends, he is more inclined towards studies.  The names of a handful of friends are Mrinal, Rimi, Kakli, Sebina and Sumant.  In the first year, he didn't talk to anyone except Rimi and Sebina. From the second year, he started to mix with everyone.  And now the practice of friendship of the six of them can be heard in the mouths of everyone in the college.

 Among the six of them, there is a lot of discussion as well as discussions about studies.  Some of their houses are not near the college, some come by train or some by bus.  Like the rest of them, their friendship was full of naughtiness, jhalmuri chatter, chatting in the canteen, but the thing that sets them apart from everyone else is their love for each other.  One day Nirmala said in words that she had never been to Motijheel, she had seen many people posting pictures there on social media but it has not become visual yet.  At that time, everyone started talking normally, but Nirmala did not know. Later, the rest of the friends planned to take Nirmala to a new Motijheel.  Everyone came to the college the next day and surprised Nirmala.  First of all, Sebina said, then when will Berobi leave home on Sunday?  Immediately Mrinal said, "Come on, take off your yellow dress, what you wore on your last birthday, it suits you very well."  Before Nirmala could understand anything, Sumant said that if it was a little late to return home, call Mama to the station.  Nirmala did not understand anything and reacted with a distorted face, you mean?  I don't understand what you are saying.  Immediately Rimi replied or .. re .., I planned to go to Motijheel with difficulty for Madam and I don't understand whether she says Madam or not.

 Nirmala 'th'.  I couldn't think whether he would dance happily or Mama would agree.  Seeing her pale face even in such happiness, Kakli said it is our responsibility to convince your uncle, you give up that thought.  This time Nirmala could not stop her tears happily.  He hugged Rimi, Kakli and Sebina.  Mrinal's funny joke from the side - yes-yes, I made the plan with so much effort and now they are all.  All right, you hugged each other and I started crying.  Sumant said in unison, "I'm with you too, brother, let's both cut."  Then the four of them left the embrace and said together, "Listen, madmen, this way."  Nirmala cried and said in a light heavy voice that she would not give peace even for a minute.  Saying this, Mrinal hit one of the bags hard on the back.  Sumant laughed to annoy Nirmala and said that Mrinal had dust on your back and dropped it with a bag.

 Yes, that's how sweet their relationship is.

 Mrinal has not only planned for Nirmala this time but also before.  It is true that they all have an intimate relationship but lately Mrinal has been showing a little more interest in Nirmala, a little different interest.  And Sebina noticed that very well, she told Kakli about it.  Then they both decided to talk to Mrinal about the matter separately.  The day to go to Motijheel to discuss this was the perfect time, and that's exactly what they did.



 (Second episode will be released on 29/05/2020, Friday)

Friday, May 22, 2020

বিশেষ সূচনা

24/05/2020- অর্থাৎ সামনে রবিবার থেকে এখানে একটি ধারাবাহিক গল্প পোস্ট করতে চলেছি ।
সেক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা ও মতামত একান্ত কাম্য । গল্পটি যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের সঙ্গে Share করে বাধিত করবেন । আর কিছু পরামর্শ বা অন্য কোনো মতামত থাকলে অবশ্যই comment করে জানাবেন ।


আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা ।
এই blog টি শুধু ভারতবর্ষের মানুষই ফলো করে না, ভারতবর্ষের সঙ্গে সঙ্গে আমেরিকা, ইন্দোনেশিয়া, ইংল্যান্ড , জার্মানি, মালয়েশিয়া, ইতালি, সিঙ্গাপুর, জাপান, নেপাল, বাংলাদেশ সহ আরো অনেক দেশ থেকেও এই blog টি ফলো করা হয় । অর্থাৎ ভারতবর্ষ সহ পৃথিবীর যে সকল দেশে বাঙ্গালি মানুষ রয়েছেন সেই সব জায়গা থেকে এই blog এর লিখা গুলো মানুষ পড়েন।
আজ আপনাদের সকলকে মন থেকে অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই । এই ভাবেই সারাজীবন পাশে থাকুন ।
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏



Wednesday, May 13, 2020

               বর্ণনা
হৃদয় হরণ = বিমান চন্দ্র দাস


ভেজা গোলাপের পাপড়ি তুমি
                 তুমিই অনুরাগীনি,
সকালে ওঠা সূর্য তুমি
                আমার স্বপ্নচারীনি।
পূর্ণিমার রাতের চাঁদ তুমি
                মোর জীবন সঙ্গীনি,
গোধূলি বেলার আলোক তুমি
                আমার জীবনের রাগীনি।
কৃষ্ণ যুগের রাধা তুমি
রামের যুগের সীতা,
                তুমি জীবনে না এলে
                মোর জীবনটাই বৃথা।
রোমিওর জুলি তুমি
দেবদাসের পার্বতী,
                 চেহারায় ঊর্বষী তুমি
                 বুদ্ধিতে স্বরসতী।
প্রখর গ্রীষ্মেও হিম তুমি
                 খুশির ক্রন্দন,
শীতের সোনালী রোদ তুমি
                 হৃদয়ের স্পন্দন ।
বসন্তের কোকিলের গান তুমি
কুয়াশায় ঢাকা পর্বতের চূড়া,
                 সদ্য ফুটে ওঠা ফুল তুমি
                 দর্শনে হিম হয়ে যায় শিরা।

এখন থেকে বিমান চন্দ্র দাস নামেই সব পোস্ট করবো🙏🙏🙏🙏


Tuesday, May 12, 2020

জীবন সায়াহ্ণে : - বাংলা গল্প

জীবন সায়াহ্ণে
               হৃদয় হরণ = বিমান চন্দ্র দাস 

ফাল্গুন মাসের হালকা শীতের মধ্যে রঘুনাথগঞ্জ ফুলতলায় অটোরিক্সার জন্য দাঁড়িয়ে আছি । সালটা 2030 শনিবার, হঠাৎ এক 16- 17 বছরের যুবতী আমার দিকে এগিয়ে এসে বলল "সেলাম ম্যাম" । আমি কিছুক্ষনের জন্য 'থ' হয়ে গেলাম , মুখটা খুব চেনা মনে হচ্ছিল কিন্তু ঠাউরে উঠতে পারছিলাম না । কয়েক সেকেন্ড পর আমার মুখ ফুটলো- কে বলোতো ?আমি ঠিক চিনতে পারলাম না ...    ম্যাম আমি আফসানা । নামটা শোনা মাত্র আমার মস্তিষ্কে জীবনের পুনরাবৃত্তি ঘটলো কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে । সেগুলো চেপে রেখে বললাম আরে আফসানা কত বড়ো হয়েছিস, কেমন আছিস, এখানে একা কি করছিস? এত গুলো প্রশ্ন শুনে সে বলল আস্তে ম্যাম আস্তে সব বলছি। হঠাৎ দেখি অটোরিকশা এসে দাঁড়ালো কিন্তু পরের টা ধরবো বলে ছেড়ে দিলাম । সত্যি বলতে কি আমিও চাইছিলাম ওর সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটাতে। সেই ছোট্ট বেলায় আমার কাছে পড়তে আসতো। হঠাৎ কানে ভেসে উঠলো ম্যাম আপনি বাড়ি যাবেন তো? আমি বললাম হ্যাঁ আর তুই? হ্যাঁ ম্যাম আমিও যাবো ঐ ত আমার বান্ধবী চলে এসেছে আমরা একসঙ্গে এসেছি। আমি বললাম চল তাহলে একই অটো তে যাওয়া যাক। হ্যাঁ ম্যাম চলুন ।
অটো তে আসতে আসতে সে অনেক কথা বললো আমাকে। তারা পুরনো বাড়ি থেকে চলে গিয়ে খুব একটা ভালো নেই । রোজ বাবা মায়ের অশান্তি তার মধ্যে আবার তার নাকি বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে। সব মিলিয়ে তার মনটা খুব খারাপ , তবুও আমার সঙ্গে কথা বলার সময় তার মুখের দিকে তাকিয়ে বোঝার উপায় ছিল না যে তার মন খারাপ । আমাকে অনেক দিন পর সামনে পেয়ে এতটাই খুশি ছিল সে। হ্যাঁ অনেক দিন, তা প্রায় 10 বছরের বেশি সময় হয়ে গেছে ।
সে তার বিয়েতে বার বার করে আসার জন্য কাকুতিমিনতি করতে লাগলো। আমি বললাম ঠিক আছে যাবো। আমার বাড়ি পৌঁছানোর আগের স্টপে সে নামলো। নামার সময় তার পূর্ণিমার চাঁদের মত মুখটা যেন ম্লান হয়ে এলো। জানি না কোথা থেকে আমার চোখেও একবিন্দু জল এসে হাজির হলো । তাড়াতাড়ি সেটা মুছে ফেললাম যাতে অন্যান্য যাত্রীরা দেখতে না পায় । বাড়ি এসে মুখ হাত ধুয়ে একটু পুরনো স্মৃতি গুলো মনে পড়তে লাগলো। ফুলতলায় যেই আবেগ টা চেপে রেখেছিলাম সেটা বাড়ি এসে আর পারলাম না । সব একে একে মনে পড়তে লাগল । বিছানায় হেলান দিয়ে বসতেই আমার মেয়ে এসে বললো মা কি হয়েছে? আমি বললাম কিছু না যাও খেলো। মেয়ের বয়স 6 বছর । হ্যাঁ ঠিক এই বয়সেই সবাই পড়তে আসতো আমার কাছে । 10 বছর আগের কথা, কতোই না সুন্দর ছিল দিন গুলো  সুখ দুঃখ, হাসি কান্না, সব মিলিয়ে ভালোই কাটতো। মাঝে মাঝে বন্ধু বান্ধবী দের সাথে ফোনে কথা আর আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের কথা না হয় বাকিই থাক। আমার জীবনের গল্প যতদিন বেঁচে থাকবে তার গল্প ও ততোদিন চলতে থাকবে ।  স্কুলে ফেলে আসা স্মৃতি , আহিরন হল্ট, আজিমগঞ্জ জংশন, নিমতলা ফেরিঘাট, শ্রীপত সিং কলেজ, উফ্ফ কি দিন ছিলো সেই সব। সংসারের বেড়াজালে আটকে ফুরসত ই পায় না দিন গুলো মনে করার। আজ আফসানা সব মনে করিয়ে দিলো। সত্যি স্মৃতি খুব কাঁদায়। চোখের জল ধরে রাখতে পারছি না । তখন 2020 সাল ছিল, সেই বছরই পরিস্থিতির কারণে আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের সঙ্গে কথা কমে যেতে থাকে । কিন্তু মনের মধ্যে ভালোবাসা টা এখনো একইরকম আছে । আজ আবার অনেক দিন পর ফিরে দেখা যাক সেই দিন গুলো । একে একে সবাই কে ফোন করে দেখি সবাই কেমন আছে। আমি জানি কেউ ফোন ধরুক বা না ধরুক আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ধরবেই  ...........